আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়
আশ্চার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় (পি সি রায়) বাংলাদেশের খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাডুলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার হরিশচন্দ্র রায ছিলেন স্থানীয় জমিদার। তার পড়াশোনা শুরু হয় বাবার প্রতিষ্ঠিত এম ই স্কুলে। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতার হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন, কিন্তু রক্ত আমাশায় রোগের কারণে গ্রামে ফিরে যান। ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় অ্যালবার্ট স্কুলে ভর্তি হন এবং ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি মেট্রোপলিটন কলেজে (বর্তমান বিদ্যাসাগর কলেজ) ভর্তি হন এবং ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে এফ এ পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করে তিনি প্রেসিডেন্সী কলেজে বি এ ক্লাসে ভর্তি হন। প্রেসিডেন্সী থেকে গিলক্রিস্ট বৃত্তি নিয়ে তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যান। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বি এসসি পাশ করেন৷
পরবর্তীকালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়েই কপার ম্যাগনেসিয়াম শ্রেণীর সম্মিলিত সংযুক্তি পর্যবেক্ষণ (Conjugated Sulphates of Copper Magnesium Group: A Study of Isomorphous Mixtures and Molecular Combination) গবেষণা সমাপ্ত করেন এবং পিএইচ ডি ও ডি এসসি ডিগ্রী লাভ করেন। তার এই গবেষণাপত্রের জন্য তাকে হোপ প্রাইজে ভূষিত করা হয়। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে সিপাহী বিদ্রোহের আগে ও পরে (India Before and After the Sepoy Mutiny) এবং ভারতবিষয়ক বিভিন্ন নিবন্ধ লিখে ভারতবর্ষ এবং ইংল্যান্ডে সাড়া ফেরে দেন।
নিজের বাসভবনে দেশীয় ভেষজ নিয়ে গবেষণা আরম্ভ করেন। এখানে প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যাল কারখানা ভারতবর্ষের শিলপায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারকিউরাস নাইট্রাইট (HgNO2) আবিষ্কার করেন যা বিশ্বব্যাপী আলোড়নের সৃষ্টি করে। এটি তার অন্যতম প্রধান আবিষ্কার। তিনি তার সমগ্র জীবনে মোট ১২টি যৌগিক লবণ এবং ৫টি থায়োএস্টার আবিষ্কার করেন।
সমবায়ের পুরোধা স্যার পিসি রায় ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে নিজ জন্মভূমিতে একটি কো-অপারেটিভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী পিসি রায় পিতার নামে আরকেবিকে হরিশ্চন্দ্র স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুর গবেষণা সহকারী ছিলেন।